পাই নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে বাংলাদেশের বাজারে
পাই নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে বাংলাদেশের বাজারে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আজকে নিয়ে আসছি একটি বিশদ আলোচনা যেখানে আপনি পাই নেটওয়ার্ক সম্পর্কেও জানতে পারবেন তাই বিস্তারিত জানতে পড়ো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পাই নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে বাংলাদেশের বাজারে এবং এটি বাংলাদেশের বাজারে কি প্রভাব ফেলবে তা জানতে মূল আলোচনায় চলে যান।
পাই নেটওয়ার্ক কি
পাই নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে এবং কিভাবে বাংলাদেশের বাজারে প্রভাব ফেলবে তা জানার আগে পাই নেটওয়ার্ক কি সেটা আগে জেনে নেই। ২০১৯ সালে ডিজিটাল ক্রিপ্টোকারেন্সি পাই নেটওয়ার্ক চালু হয়েছিল স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটির কিছু শিক্ষার্থীর মাধ্যমে। তারা এটা তৈরি করেছিল ব্লকচেইন প্রযুক্তির ভিত্তিতে।
এটি গণিতের বিখ্যাত সংখ্যা "পাই" থেকে নেওয়া হয়েছে। এটি তৈরি করার পেছনে উদ্দেশ্য ছিল যাতে সাধারণ ব্যবহারকারীরা যারা আছেন তারা যাতে সহজেই ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং করতে পারে।
আরও জানতে পারেনঃ
২০২৪ সালে বাংলাদেশে আজকের সোনার দাম: সর্বশেষ আপডেট।
চীনে চালু করা হোল বিশ্বের প্রথম এআই হাসপাতাল।
২০২৪ সালে বাংলাদেশে এয়ার কুলার এর দাম-মূল্য তালিকা।
ব্যবহারকারীরা যাতে ফনের মাধ্যমে মাইনিং করতে পারেন সেইজন্য একটি বিশেষ মোবাইল অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এই অ্যাপে একটি বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যেটার নাম ব্লকচেইন প্রযুক্তি। এটা প্রচলিত ক্রিপ্টোকারেন্সির তুলনায় সহজলভ্য।
পাই নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে বাংলাদেশের বাজারে
পাই নেটওয়ার্কের প্রধান বৈশিষ্ট্য
পাই নেটওয়ার্ক কিভাবে কাজ করে?
পাই নেটওয়ার্ক কি বাংলাদেশে বৈধ
পাই নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে বাংলাদেশের বাজারে এটা জানতে হলে আগে জানতে হবে পাই নেটওয়ার্ক বাংলাদেশে বৈধ কিনা। যেহেতু এটি একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি তাই বেশরভাগ মানুষ এ বিষয়ে এখনও সচেতন না।
বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রিপ্টোকারেন্সিকে এখনও বৈধতা দেয়নি। এইজন্য ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেন আইন অনুযায়ী অনুমোদিত নয় কিন্তু সরকার বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক আবার এটিকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধও ঘোষণা করেনি।
পাই নেটওয়ার্কের বর্তমানে মূলকাজ হল মোবাইলে অ্যাপ ব্যবহার করে প্রতিদিন মাইনিং করা। এতে ব্যবহারকারীদের কোন টাকা লেনদেনের সাথে জরিত থাকতে হয়না শুধু কয়েন সংগ্রহ করলেই হয়। বর্তমানে পাই নেটওয়ার্কের মূল কাজ হল ব্যবহারকারী শুধু কয়েন সংগ্রহ করতে পারবেন কিন্তু কোন টাকা লেনদেন করতে পারবে না।
এই কারনে মাইনিং প্রক্রিয়া এখন পর্যন্ত আইনগতভাবে সমস্যার আওতায় পরছেনা। এটি আইনগতভাবে তখনি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে যখন এটি মেইননেট চালু করে লেনদেন শুরু হবে। এক্ষেত্রে আবার সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী চলতে হবে।
ভবিষ্যতে এসব মুদ্রার বৈধতা নির্ধারণের জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন আইন বা নীতিমালা নিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে। এখন পর্যন্ত এই নেটওয়ার্ক ব্যবহারে নিষেধ না থাকলেও বাজারে যদি লেনদেন শুরু হয় তাহলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে।
পাই নেটওয়ার্ক আপডেট
পাই নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে বাংলাদেশের বাজারে এর আপডেট সম্পর্কে এখন আলোচনা করব। সাম্প্রতিক সময়ে আপনাদের বহুল প্রতিক্ষিত ওপেন মেইননেট চালুর ঘোষণা দিয়েছে পাই নেটওয়ার্ক। এটি একটি বড় অর্জন হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে।
এটি যদি ঘোষণা করা হয় তাহলে মেইননেট যারা ব্যবহার করেন তারা নিজেদের মাইন করা পাইন কয়েন বাজারে লেনদেন করতে পারবে অনায়াসে। তবে এক্ষেত্রে শুরুর দিকে এটি সীমিত কিছু ব্যবহারকারীর জন্যই চালু থাকবে পরে ধাপে ধাপে এটি সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে।
পাই নেটওয়ার্কের মাইনিং প্রক্রিয়াটি খুব সহজ এবং সাশ্রয়ী। এতে খুব বেশি মোবাইলের ব্যাটারি বা ডেটা খরচ হয়না কারণ এটি ক্লাউড-ভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজ করে। এই কারনে ফোনে প্রসেসিংয়ের সময় কোনো অতিরিক্ত চাপ পড়ে না।
বর্তমানে পাই নেটওয়ার্ক, ব্যবহারকারীদের জন্য একটি নিরাপত্তা বৃত্ত তৈরি করার সুযোগ করে দিচ্ছে। এখানে আপনি চাইলে আপনার কোন বিশ্বস্ত বন্ধুকে অনায়াসে যুক্ত করতে পারবেন। এর ফলে মাইনিং রেট যেমন বাড়ে তেমন একটি নিরাপত্তা বৃত্ত তৈরি হওয়ার সুযোগ হয়।
পাই নেটওয়ার্ক এখন আরেকটি ফিচার নিয়ে আসছে। এটা এখন KYC বা পরিচয় যাচাই প্রক্রিয়া আরও উন্নত করেছে এতে যেটা সুবিধা হয়েছে তা হল প্রতিটি ব্যবহারকারীর প্রকৃত এবং বৈধ পরিচয় নিশ্চিত করা যাচ্ছে যা এই প্রকল্পটি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করছে।
ডেভেলপাররা যাতে পাই কয়েন ব্যবহার করে নানা ধরনের অ্যাপ তৈরি করতে পারে সেজন্য তারা একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে যাতে ভবিষ্যতে এই কয়েন ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্য ও সেবা কেনা যায়। এগুলো ছাড়াও এর আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক আছে।
ব্যবহারকারীরা যাতে তাদের মাইন করা কয়েন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লক করে রাখতে পারে সেজন্য এখানে পাই লকআপ সিস্টেম আছে। তবে এটা শুধু তাদের জন্য লাভজনক যারা মূলত দীর্ঘমেয়াদে পাই ব্যবহার করতে চান।
ডিজিটাল মার্কেটপ্লেসেও পাই নেটওয়ার্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিচ্ছে। এখানে আপনি এই পাই কয়েন দিয়ে বিভিন্ন পণ্য ও সেবা কেনার সক্ষমতা রাখবেন। এটি চালু থাকলে পাই কয়েনের ব্যবহার আরও বাড়াবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
প্রতিদিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ার ফলে তারা একটা নতুন নিয়ম করেছে যেখানে মাইনিং রেট ধীরে ধীরে কমানো হচ্ছে। এর কারণ কয়েনের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা। এই নেটওয়ার্ক এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেটা সাধারণ মানুষকে সহজ, সাশ্রয়ী এবং নিরাপদ উপায়ে ক্রিপ্টো দুনিয়ায় প্রবেশ করার সুযোগ করে দিচ্ছে।
শুধু তাই না এটি ক্রিপ্টোকারেন্সিকে আরও জনপ্রিয় এবং ব্যবহারযোগ্য করতে কাজ করে যাচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত অনেক কিছু পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকলেও মেইননেট প্রকল্প চালু হলে বাস্তব জীবনে এর কার্যকারিতা আরও উন্নত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাই নেটওয়ার্ক দিয়ে মাইন করার প্রক্রিয়া
তাহলে এতক্ষণের আলোচনায় বুঝতে পারলেন পাই নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে বাংলাদেশের বাজারে। এখন পাই নেটওয়ার্ক দিয়ে মাইন করার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রক্রিয়াটি সহজ এবং যারা মোবাইল ব্যবহার করেন তাদের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে করে ফোনের মাধ্যমেই Pi কয়েন মাইন করতে পারেন।
এটি আবার বিটকয়েনের মতো প্রচলিত ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং এর মত না বরং এর তুলনায় সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং ব্যাটারি বা প্রসেসিং পাওয়ারের অতিরিক্ত ব্যবহার লাগেনা।
পাই নেটওয়ার্কে মাইনিং করার ধাপসমূহ
- প্রথমেই আপনাকে যেটা করতে হবে তা হল Android বা iOS-এ Pi Network অ্যাপ ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে হবে।
- এরপর আপনাকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার একটি মোবাইল নম্বর বা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এর প্রয়োজন হবে।
- Pi Network ব্যবহার করতে রেফারেল কোড প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে আপনি আপনার বন্ধুর বা পরিচিত কারও রেফারেল কোড ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও অন্য কোথাও থেকেও রেফারেল কোড সংগ্রহ করতে পারেন।
- মাইনিং করতে শুধুমাত্র আপনাকে একটি কাজ করতে হবে সেটি হল অ্যাপের হোম স্ক্রিনে থাকা মাইনিং বাটনে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করার সাথে সাথেই মাইনিং শুরু হয়ে যাবে এবং এটি ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত চলবে।
- আপনি যদি মাইনিং রেট বাড়াতে চান তাহলে আপনি নতুন ব্যবহারকারীদের রেফার করে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি প্রতিটি রেফারেলে অতিরিক্ত মাইনিং রেট পাবেন। এছাড়াও মাইনিং রেট বাড়ানোর আরেকটি সুযোগ আছে যেমন
- আপনি যদি মাইনিং রেট বাড়াতে চান তাহলে আপনি নতুন ব্যবহারকারীদের রেফার করার সুযোগ পাবেন। সেক্ষেত্রে আপনি অতিরিক্ত কিছু মাইনিং রেট পাবেন।
- এই নেটওয়ার্ক ব্যভারে বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যার ফলে এটি ব্যবহারে আপনার মোবাইল ডিভাইসের ব্যাটারি বা ইন্টারনেট ডেটা বেশি খরচ হয়না কারণ এটি একটি ক্লাউড-ভিত্তিক মাইনিং। এখানে আপনার ফোন সরাসরি একটি সার্ভারকে মাইনিং করার অনুমতি দিয়ে থাকে।
পাই কয়েন বা পাই নেটওয়ার্ক মাইনিং এর সুবিধাসমূহ
- পাই নেটওয়ার্ক এমন একটি ডিজিটাল মুদ্রা যেটা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খুব সহজে মাইনিং করতে পারবেন।
- এক্ষেত্রে বিটকয়েন বা অন্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো জটিল যন্ত্রপাতির কোন প্রয়োজন নেই।
- আপনার যদি শুধু একটা স্মার্টফোন থাকে তাহলে শুধুমাত্র একবার অ্যাপে ঢুকে একটি বোতামে চাপ দিলেই মাইনিং শুরু হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে ব্যাটারি বা ডেটা বেশি খরচ হয় না।
- এটার ব্যবহার এতই সহজ যে নতুন ব্যবহারকারীরা খুব সহজেই বুঝে নিতে পারে।
- এটা KYC প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যবহারকারীর পরিচয় যাচাই করা যায় তাই এই অ্যাপটি নিরাপদও।
- অন্যদের বা পরিচিতদের রেফার করার মাধ্যমে যদি একটি নিরাপত্তা বৃত্ত তৈরি করতে পারেন তাহলে অতিরিক্ত মাইনিং রেট পাবেন।
- যদিও পাই কয়েন বর্তমান বাজারে লেনদেনযোগ্য নয় তারপরও যদি মেইননেট সফলভাবে চালু হয় তাহলে ভবিষ্যতে এই কয়েন কেনাবেচা করার মাধ্যমে আয় করা সম্ভব।
- এখানে কোন রকম বিনিয়োগ ছাড়াই আপনি প্রতিদিন কয়েন জমাতে পারবেন।
এক পাই এর ডলার রেট বা পাই নেটওয়ার্কের দাম
পাই নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে বাংলাদেশের বাজারে এই ব্যপারে আমরা জানলাম এখন জানব ক পাই এর ডলার রেট কত। বর্তমানে Pi কয়েনের নির্দিষ্ট কোন মূল্য এখনও নির্ধারণ হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন এটা লঞ্চের পর এর মূল্য ১০ থেকে ৩০ ডলারের মধ্যে থাকতে পারে।
লেখকের মন্তব্য
পাই নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে বাংলাদেশের বাজারে এ বিষয়ে আমরা মোটামুটি একটা ধারণা পেলাম। এখন আমাদের অপেক্ষার পালা। সময় অনুযায়ী এর বাজার চাহিদা বাড়বে। আজকের পোস্টটি ভাল লেগে থাকলে আপনার পরিচিতজনদের সাথে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করে পাশে থাকবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url